চাঁদ দেখা গেছে, কাল ঈদ


ঢাকার চোখ প্রকাশের সময় : এপ্রিল ২১, ২০২৩, ১১:৫৪ অপরাহ্ন
চাঁদ দেখা গেছে, কাল ঈদ
বাংলাদেশের আকাশে পবিত্র শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা গেছে। তাই আগামীকাল শনিবার (২২ এপ্রিল) পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে।

শুক্রবার (২১ এপ্রিল) ইসলামিক ফাউন্ডেশন বায়তুল মোকাররমের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভা থেকে শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখার বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।

এদিকে শুক্রবার (২১ এপ্রিল) মধ্যপ্রাচ্যের সৌদি আরবসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা যায়। শুক্রবার (২১ জুন) সেসব দেশে পবিত্র ঈদুল ফিতর পালিত হয়।

এবার সুপ্রিমকোর্ট প্রাঙ্গণে জাতীয় ঈদগাহে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল সাড়ে ৮টায়। জাতীয় ঈদগাহে রাষ্ট্রপতি, মন্ত্রিসভার সদস্য, কূটনীতিকসহ অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা ঈদের নামাজ আদায় করে থাকেন। এখানে জামাতে অংশ নিতে পারবেন একসঙ্গে ৩৫ হাজার মুসল্লি।

ইতোমধ্যে প্রধান জামাতের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)। পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

এদিকে, জাতীয় ঈদগাহে জামাতে লাইটার, দিয়াশলাই বা অন্য যে কোনো দাহ্য পদার্থ বহন না করার অনুরোধ জানিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি)।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে জানানো হয়, আবহাওয়া প্রতিকূল হলে ঈদের প্রধান জামাত জাতীয় ঈদগাহ থেকে পরিবর্তিত হয়ে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে সকাল ৯টার জামাতের সঙ্গে একীভূত হবে। এই জামাতে নামাজ আদায় করবেন রাষ্ট্রপতি।

বিগত বছরের মতো এবারও বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে ঈদুল ফিতরের নামাজের পাঁচটি জামাত অনুষ্ঠিত হবে। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ঈদের দিন সকাল ৭টা, ৮টা, ৯টা, ১০টা ও ১০টা ৪৫ মিনিটে বায়তুল মোকাররমে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে।

সকাল ৭ টায় অনুষ্ঠিত হবে প্রথম জামাত। এতে ইমাম থাকবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম হাফেজ মুফতি মাওলানা মিজানুর রহমান। মুকাব্বির থাকবেন বায়তুল মোকাররম মসজিদের মুয়াজ্জিন ক্বারি মো. ইসহাক।

সকাল ৮টায় অনুষ্ঠিত হবে দ্বিতীয় জামাত। এতে ইমাম থাকবেন বায়তুল মোকাররমের পেশ ইমাম হাফেজ মুফতি মুহিবুল্লাহিল বাকী নদভী। মুকাব্বির থাকবেন বায়তুল মোকাররমের খাদেম হাফেজ মো. আব্দুল মান্নান।

সকাল ৯টায় তৃতীয় জামাতের ইমাম হবেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মুফাসসির মাওলানা আবু ছালেহ পাটোয়ারী। বাতুল মোকাররমের সাবেক মুয়াজ্জিন হাফেজ মো. আতাউর রহমান মুকাব্বির থাকবেন।

সকাল ১০টায় হবে চতুর্থ জামাত। এতে ইমাম হবেন বায়তুল মোকাররমের পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা এহসানুল হক। মুকাব্বির থাকবেন বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের চিফ খাদেম মো. শহিদ উল্লাহ।

সকাল ১০টা ৪৫ মিনিটে হবে পঞ্চম ও সর্বশেষ জামাত। এতে ইমাম থাকবেন বায়তুল মোকারমের পেশ ইমাম মাওলানা মুহিউদ্দিন কাসেম। মুকাব্বির হবেন খাদেম হাফেজ মো. জহিরুল ইসলাম। পাঁচটি জামাতে কোনো ইমাম অনুপস্থিত থাকলে বিকল্প ইমাম হিসেবে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মুফতি মাওলানা মো. আব্দুল্লাহ দায়িত্ব পালন করবেন।

ঈদের জামাতে অংশ নিতে যাওয়া মুসল্লিদের মসজিদ ও মসজিদের আশপাশে কোনো ধরনের লাইটার, দিয়াশলাই বা যে কোনো ধরনের দাহ্য পদার্থ সঙ্গে নিয়ে না যাওয়ার অনুরোধ করেছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন।

ঈদ মুসলমানদের জাতীয় সম্মেলন ও ঐক্যের প্রতীক। ঈদের সূচনা হয় হিজরি দ্বিতীয় সন অর্থাৎ ৬২৩ খ্রিস্টাব্দ থেকে।

অন্ধকার যুগে আরবের মক্কায় ‘উকাজ মেলা’ এবং মদিনায় ‘নীরোজ’ ও ‘মিহিরগান’ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে অশ্লীল আনন্দ-উল্লাস করা হতো। মদিনায় আগমনের পর ইসলামের নবী হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মুসলমানদের জন্য ক্ষতিকর ও অশ্লীলতামুক্ত স্বতন্ত্র আনন্দ-উৎসবের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করেন। এজন্য তিনি মুসলমানদের নির্মল আনন্দ উৎসব করতে বছরে দু’টি ‘ঈদ’ উৎসবের প্রর্বতন করেন। এর একটি- ঈদুল ফিতর।

ঐতিহ্যগতভাবে বাংলাদেশের ঈদ আয়োজনে নানা রকম সেমাই, ফিরনি, পিঠা, পায়েস, পোলাও-কোরমাসহ সুস্বাদু খাবারের আয়োজন থাকে ঘরে ঘরে। এ দিন বিশেষ আয়োজন থেকে বাদ যাবেন না হাসপাতালের রোগী, কারাগারের বন্দী বা বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত কর্মীরাও।

এতিমখানা, সরকারি শিশু সদন, ছোটমণি নিবাস, সামাজিক প্রতিবন্ধী কেন্দ্র, আশ্রয়কেন্দ্র, বৃদ্ধাশ্রম, ভবঘুরে কল্যাণকেন্দ্র ও দুস্থ কল্যাণকেন্দ্রেও থাকবে বিশেষ খাবার ও বিনোদনের ব্যবস্থা।