ভাসুরপোকে নিয়ে চম্পট দিলেন স্বামীর বিরুদ্ধে যৌতুক মামলা


ঢাকার চোখ প্রকাশের সময় : জানুয়ারী ৮, ২০২৫, ১১:১৩ পূর্বাহ্ন
ভাসুরপোকে নিয়ে চম্পট দিলেন স্বামীর বিরুদ্ধে যৌতুক মামলা

কেরানীগঞ্জ প্রতিনিধি: দীর্ঘদিনের পরকিয়া প্রেমিক ভাসুরপুত্রের প্রেমে হাবুডুবু খাওয়া মাইমুনা পরকিয়া প্রেমিককে নির্বিঘ্নে পেতে স্বামীকে করেছেন আসামি! কখনো বাসা ভাড়া নিয়ে, কখনো নিজ বাসায় আবার কখনোবা স্বজনদের বাসায় গিয়ে শিশুপুত্রের সামনেই করতেন মেলামেশা, তবে এতেও তার খায়েস মিটেনি। পরকিয়া প্রেমিককে জীবনসঙ্গী হিসেবে পেতে স্বামীর বিরুদ্ধে ঠুকে দেন যৌতুক মামলা।

শশুরের হস্তক্ষেপে স্বামী-স্ত্রী এক সাথে থাকার শর্তে জামিন নিয়ে এক সাথে থাকা শুরু করলে কিছুদিন যেতে না যেতেই পরকিয়া প্রেমিকের সাথে ফের শুরু করেন অবৈধ মেলামেশা। আর ধরা পড়ায় এবার পরকিয়া প্রেমিকের হাত ধরে চম্পট দেন চাচী মাইমুনা।

এদিকে শিশু পুত্রকে নিয়ে স্ত্রীকে ফিরে পেতে দ্বারেদ্বারে ঘুরছে অসহায় স্বামী মাইনুদ্দিন। ঘটনাটি ঘটেছে কেরানীগঞ্জ মডেল থানার জিঞ্জিরা ইউনিয়নের নজরগঞ্জ এলাকায়।

বুধবার  (৮ ডিসেম্বর) সকাল নয়টায় ভুক্তভোগী মাইনুদ্দিন কেরানীগঞ্জ প্রেসক্লাবে এসে সাংবাদিকদের জানায়, আমার বাড়ি চট্টগ্রাম জেলার মিরসরাই থানার সাহেরখালী গ্রামে। ২০১৬ সালে একই জেলার সীতাকুণ্ড থানার বাকখালী গ্রামের আব্দুর রহিম এর কন্যা মায়মুনাকে পারিবারিক ভাবে আমি বিয়ে করি । ৭ বছরের ফুটফুটে এক পুত্র আছে আমাদের। আমি ঢাকায় যমুনা গ্রুপে চাকুরী করি। আমার ঢাকা থাকার সুযোগে আমার প্রতিবেশি এক ভাতিজা রাকিবের সাথে পরকিয়া প্রেমের সম্পর্কে জড়ায় আমার স্ত্রী। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়ভাবে সমাধান হলে সে রাকিবের সাথে সম্পর্ক রাখবে না বলে প্রতিশ্রুতি দেয়।

কিন্তু সে বাবার বাড়িতে যাওয়ার কথা বলে গত ২৪ এপ্রিল আমার নামে চট্টগ্রাম চীপ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে যৌতুক মামলা করে। ঐ মামলায় গত ১১ আগস্ট আমার শশুর আমার জামিনদার হয়ে আবেদন করলে আদালত আমার জামিন মঞ্জুর করে। আমি জামিন পেয়ে আমার স্ত্রী সন্তানকে নিয়ে কেরানীগঞ্জের নজরগঞ্জে বাসা ভাড়া নিলে আমার পুত্র আমাকে জানায় কাছেই একটি বাসায় সে তার মাকে নিয়ে কয়েকমাস থেকেছে। সে আমাকে ঐ বাসায় নিয়ে আসলে বাড়ির মালিকের বৌসহ অন্যান্য ভাড়াটিয়ারা আমার পুত্রকে চিনতে পারে।  ঐ বাসায় প্রায়শই পরকিয়া প্রেমিক রাকিব রাতের বেলা এসে রাত্রি যাপন করতো বলে জানিয়েছে বাড়ীর মালিকের স্ত্রী ও পাশের রুমের বাসিন্দারা।

ঐ বাড়ির মালিকের স্ত্রী জানায়, এই বাচ্চা নিয়ে মায়মুনা আমাদের বাসায় উঠে।  তার স্বামী শহরে থেকে চাকুরী করে বলে জানায়। একদিন রাকিবকে তার স্বামী বলে পরিচয় করিয়ে দেয়। কিন্তু এই বাচ্চার আসল বাবা হিসেবে আজ মাইনুদ্দিন নামে ব্যক্তি দাবি করছে।
পরকিয়া প্রেমিকের সাথে যে বাসায় ভাড়া থাকতো সে বাসার দেয়ালে দেয়ালে লিখেছে প্রেমের কাব্য। পাশের রুমে বসবাসকারী বয়স্কা মহিলা জানায়, গভীর রাতে বাসায় রাকিব আসতো। আমরা আওয়াজ পাইতাম। দেখেন রুমের দেয়ালে কি সব লেইখা রাখছে।

পরকিয়া প্রেমিক রাকিবকে কল করা হলে সে সব কিছু অস্বীকার করলেও মাইনুদ্দিনের স্ত্রী মায়মুনার সাথে করা চ্যাট ও ভিডিও কলের স্ক্রিনশট তাদের সম্পর্ক থাকার বিষয় প্রমাণ করে বলে মাইনুদ্দিন দাবি করে।

এই বিষয়ে গত ২৫ নভেম্বর রাতে মায়মুনাকে বাড়ির মালিকের সামনে জেরা করলে মায়মুনা ঘটনা স্বীকার করলেও পরের দিন সকালে ছেলেকে নিয়ে মাইনুদ্দিন নাশতা করতে গেলে সে বাসা থেকে বেড়িয়ে যায়। অনেক খোঁজাখুঁজি করে কোথাও না পেয়ে কেরানীগঞ্জ মডেল থানায় ২৮ নভেম্বর সাধারণ ডায়েরী করে মাইনুদ্দিন।
জিডি তদন্তকারী কেরানীগঞ্জ মডেল থানার এস আই স্বপন কুমার দাস জানায়, মায়মুনার পরকিয়া প্রেমিকের সাথে পালিয়ে যাওয়ার বিষয়টি ভাড়া থাকা বাসার মালিকপক্ষ ও অন্যান্য ভাড়াটিয়াদের জিজ্ঞাসাবাদে সত্যতা পাওয়া গেছে।

এক দিকে মামলার ঝামেলা অপর দিকে শিশুপুত্রের লালন পালন। চাকুরীজীবী মাইনুদ্দিন দিশেহারা এইসব সামাল দিতে। তার দাবি পরকিয়া প্রেমিকের সাথেই যদি থাকবে তবে কেন মিথ্যে যৌতুক মামলা। আমি ন্যায় বিচার চাই। বিনা দোষে যৌতুক মামলা হতে রেহাই চাই।