ইন্দোনেশিয়ার জাভা দ্বীপের উত্তরে শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএস বলছে, শুক্রবার জাভায় আঘাত হানা ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল রিখটার স্কেলে ৬ দশমিক ৬। তবে প্রাথমিকভাবে এই ভূমিকম্পের মাত্রা ৭ দশমিক শূন্য ছিল বলে জানানো হয়েছিল।
ইউএসজিএসের বরাত দিয়ে ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি বলছে, জাভা দ্বীপের উত্তরে সাগরে শক্তিশালী ভূমিকম্প রেকর্ড করা হয়েছে। শুক্রবার স্থানীয় সময় বিকেল ৪টা ৫৫মিনিটে জাভায় শক্তিশালী এই ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।
দেশটির জাতীয় দুর্যোগ সংস্থা বলছে, সুরাবায়া, তুবান, সেমারাং এবং বালি দ্বীপের ডেনপাসার শহরেও ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে।
এদিকে, ইউরোপীয়-ভূমধ্যসাগরীয় ভূমিকম্প কেন্দ্র (ইএমএসসি) ইন্দোনেশিয়ায় আঘাত হানা ভূমিকম্পের মাত্রা ৬ দশমিক ৫ ছিল বলে জানিয়েছে। সংস্থাটির মতে, এই ভূমিকেম্পর উৎপত্তি হয়েছে জাভা দ্বীপের উত্তরে সাগরে ৫৯২ কিলোমিটার ভূগর্ভে।
ইন্দোনেশিয়ার জাতীয় দুর্যোগ সংস্থার মুখপাত্র আব্দুল মুহারি টেলিফোনে রয়টার্সকে বলেছেন, ভূমিকম্পটি অনেক গভীরে উৎপত্তি হওয়ায় এখন পর্যন্ত কোনও ক্ষয়ক্ষতির তথ্য পাওয়া যায়নি।
জাভা দ্বীপের উত্তর উপকূলের শহর তুবানের মুস্তিকা হোটেলের একজন কর্মী বলেন, হালকা কম্পন অনুভূত হয়েছে এবং কোনও ক্ষয়ক্ষতি ঘটেনি।
সুরাবায়ার জেডব্লিউ ম্যারিয়ট হোটেলের একজন কর্মচারী বলেছেন, এই এলাকায় তীব্র ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে; যা হোটেলের অতিথিদের মাঝে আতঙ্কের সৃষ্টি করে।
‘সব অতিথি তাদের কক্ষ থেকে বেরিয়ে হোটেলের বাইরে যান। তবে কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি,’ টেলিফোনে রয়টার্সকে জানিয়েছেন তিনি।
প্রশান্ত মহাসাগরের তথাকথিত ‘রিং অব ফায়ারে’ ইন্দোনেশিয়ার অবস্থান হওয়ায় দেশটিতে প্রায়ই ভূমিকম্প ও আগ্নেয়গিরির সক্রিয়তা দেখা যায়। আর এই রিং অব ফায়ারে টেকটোনিক প্লেটগুলোর সংঘর্ষ ঘটে। শুধু ইন্দোনেশিয়া নয়, জাপানসহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সব দেশই এ কারণে ভূমিকম্পের অত্যধিক ঝুঁকিতে আছে।
২০০৯ সালে পাদাংয়ে শক্তিশালী ৭ দশমিক ৬ মাত্রার এক ভূমিকম্প আঘাত হানে। সেই সময় প্রাকৃতিক এই দুর্যোগে এক হাজার ১০০ জনের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটে এবং আহত হন আরও অনেকে। এছাড়া ভূমিকম্পে বাড়িঘর ও বিভিন্ন স্থাপনাও ধ্বংস হয়ে যায়।
২০০৪ সালে সুমাত্রার উপকূলে ৯ দশমিক ১ মাত্রার মাত্রার ভয়াবহ একটি ভূমিকম্প হয়। ভূমিকম্পের পরপর আঘাত হানে সুনামি। তখন ওই অঞ্চলে ভূমিকম্প ও সুনামির কারণে ইন্দোনেশিয়ায় ১ লাখ ৭০ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটেছিল।