রাতারাতি সেলিব্রেটি হওয়া ‘কাঁচা বাদাম’ গায়ক ভুবনবাবু আজ চরম অভাবের মুখে। কিছুদিন আগেই শোনা যায়, তার হাতে কাজ নেই, তার গানের কপিরাইট কিনে নিয়েছে অন্য এক ব্যক্তি। তাই গান করতে পারছেন না তিনি। এমনকি কোনও শোয়ে এখন আর তাকে ডাকাও হয় না। এদিকে চাঁদার জুলুমে নিজের রাজপ্রসাদ ছেড়ে পালিয়ে অন্য গ্রামে ভাড়া রয়েছেন। এসবের মধ্যেই আবার বিপদের মুখে ভুবন বাদ্যকর। ব্যাংক একাউন্ট চেক করতে গিয়ে তিনি দেখছেন তার ব্যাংকে একটা টাকাও নেই। মাথায় হাত কাঁচা বাদাম গায়কের। বিগত ২ বছরে একটা টাকাও ঢোকেনি একাউন্টে।
এই প্রসঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে ভুবন বাবু জানিয়েছেন, ” ‘কাঁচা বাদাম’ কেনার সময় গোধূলিবালা মিউজিক’এর কর্ণধার গোপাল ঘোষ বলেছিলেন প্রত্যেক মাসে ৪০ হাজার টাকা দেবেন। কোনও মাসে সামান্য কম হতে পারে। কিন্তু মাত্র একবারই ৩৯ হাজার টাকা এসেছে, এরপর একটা টাকাও আসেনি। গত দুই বছরে ব্যাংকে কোনও টাকা ঢোকেনি”। তিনি আরও বলেন, “কপিরাইট হারানোর পর নিজের ‘কাঁচা বাদাম’ গানটাও গাইতে পারছি না। চরম দুর্দশা। যে-কটা টাকা রয়েছে তা দিয়ে সংসার চলবে না। আমায় বাঁচান”। সবমিলিয়ে পরিবারের মুখে অন্ন জোগাড় করতে চিন্তায় পড়েছেন বাদামকাকু।
এদিকে কপিরাইট ফাঁদে পড়ে প্রতারিত হয়ে নিজের গানও গাইতে পারছেন না বলে দাবি করেছেন তিনি। পশ্চিমবঙ্গের বীরভূমের দুবরাজপুরের ভুবন বাদ্যকর গান গেয়ে বাদাম বিক্রি করতেন। ওই গান ভাইরাল হলে সাধারণ বাদাম বিক্রেতা হয়ে ওঠেন লাখ লাখ টাকার মালিক। তৈরি করে দোতলা বাড়ি। তবে হঠাৎ করেই যেন হারিয়ে যান ভুবন বাদ্যকর! কোথাও খোঁজ মিলছিল না তার। সম্প্রতি ভারতীয় এক সংবাদমাধ্যমের কাছে নিজের দুরাবস্থার কথা জানাতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন ভুবন বাদ্যকর। তার দাবি, তাকে ঠকিয়ে ‘কাঁচা বাদাম’ গানের কপিরাইট হাতিয়ে নিয়েছে এক ব্যক্তি। এর জেরেই কপিরাইটের ফাঁদে পড়ে এখন ‘বাদাম’ শব্দই উচ্চারণ করতে পারছেন না তিনি।
গণমাধ্যমকে ভুবন বলেন, গান গাওয়ার সময় বাদাম উচ্চারণ করলেই কপিরাইট লাগিয়ে দিচ্ছে সাথে বন্ধ করে দিচ্ছে গান। কোথাও গান গাইলেই এই সমস্যা। চক্রান্ত করা হয়েছে আমার বিরুদ্ধে। বীরভূমের এক সংস্থা ও তার মালিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে তিনি বলেন, আইপিআরএসের নাম করে গান নিয়ে নিয়েছে। আমি তো লেখাপড়া জানি না, ইংরেজি পড়তে জানি না। আমাকে এখন বলছে তোমার গান আমি কিনে নিয়েছি। ফোন করলে ফোনও তোলে না এখন।
ভুবন বাদ্যকরের অজান্তেই তার গানের কপিরাইট কিনেছেন অন্যজন। তাই ‘কাঁচা বাদাম’ গান গাওয়াই বন্ধ হয়েছে তার। নিজের গানের টাকা পাচ্ছেন না, অনুষ্ঠান করতে গেলেও তা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এর জেরে তার নামে বদনাম হচ্ছে বলে আফসোস করেন ভুবন। এরই মধ্যে আইনি পথে হেঁটে ওই সংস্থার নামে আদালতে মামলা করেছেন তিনি।