সিরাজদিখানের অনুমতি দেখিয়ে কেরানীগঞ্জে মাটি কাটছে প্রভাবশালীরা, অনাপত্তিপত্রের সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন


ঢাকার চোখ প্রকাশের সময় : জুলাই ৭, ২০২৫, ১:১২ পূর্বাহ্ন
সিরাজদিখানের অনুমতি দেখিয়ে কেরানীগঞ্জে মাটি কাটছে প্রভাবশালীরা, অনাপত্তিপত্রের সত্যতা নিয়ে প্রশ্ন

সিরাজদিখান (মুন্সিগঞ্জ) প্রতিনিধি:সরকারি জমি ও নদী তলদেশ থেকে অবৈধভাবে মাটি উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে সিরাজদিখানের কুচিয়া মুড়া, গাভের পাড়া, চর সোনাকান্দা ও আশপাশের এলাকায়। অভিযোগের কেন্দ্রে রয়েছেন আওয়ামী লীগ ঘনিষ্ঠ দুই প্রভাবশালী ব্যক্তি আইয়ুব আলী ও আশকর আলী। তারা সিরাজদিখান উপজেলার সীমিত এলাকার জন্য অনুমতি থাকলেও সেই অনুমতি দেখিয়ে কেরানীগঞ্জ অংশে প্রবেশ করে দোলেশ্বরী নদী থেকে ড্রেজার দিয়ে মাটি উত্তোলন করছেন এবং বালহেডযোগে তা বিক্রি করছেন।

তবে তাদের প্রদর্শিত বিআইডব্লিউটিএ-এর অনাপত্তিপত্রের (NOC) সত্যতা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত হওয়া যায়নি। সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলো বিষয়টি নিয়ে নীরব থাকায় এলাকাবাসীর সন্দেহ আরও ঘনীভূত হয়েছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, নির্ধারিত সীমার বাইরে গিয়ে তারা রাত-দিন ড্রেজার দিয়ে নদীর তলদেশ কেটে বালু-মাটি উত্তোলন করছেন এবং নদীপথে বালহেডে করে মাটি পাঠানো হচ্ছে বিভিন্ন ভরাট প্রকল্পে। এতে নদীর গতিপথ পরিবর্তিত হচ্ছে, সৃষ্টি হচ্ছে ভাঙন, আর কৃষিজমি হারিয়ে যাচ্ছে চিরতরে। তারা মনে করেন অদৃশ্যে ভূত কাজ করছে। নতুবা আওয়ামী লীগের লোক হয়ে এই সময় মাটি কাটা সম্ভব না।

একজন স্থানীয় বিএনপি নেতা মামুন জানান, আশকর জেলা যুবলীগ নেতা, আয়ুব আলীও উপজেলা পর্যায়ের নেতা। তারা আওয়ামী লীগের আমলে মাটি কেটে শেষ করছে। এখন আবার শুরু করছে। আমরা চাইনা কেউ নদী কাটুক। আমরা তাদেরকে দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রেফতারের দাবী জানাই। এটি চললে বিএনপির বদনাম হবে।

আরেকজন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জানান,আমরা ভয়ে কিছু বলতেও পারি না। নদীর পাড়ে ভাঙন শুরু হয়েছে, কিন্তু কেউ দেখছে না।

এ বিষয়ে প্রশাসনের এক কর্মকর্তা জানান,
তাদের কাগজপত্র যাচাই-বাছাই চলছে। ড্রেজার দিয়ে অনুমতি ছাড়াই মাটি উত্তোলন সম্পূর্ণ বেআইনি। অনাপত্তিপত্রটি যদি জাল হয়, তবে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পরিবেশবাদীরা বলছেন, নদীর ভারসাম্য নষ্ট হলে এর প্রভাব পড়ে নদী পারের জীববৈচিত্র্য ও মানুষের জীবনে। রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় কেউ যদি ড্রেজিং ব্যবসাকে অবৈধভাবে চালায়, তা দেশের জন্য ভয়ানক বিপদ।

এদিকে এলাকাবাসী প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা না দেখে নিজেরাই নিজেদের সম্পদ রক্ষায় ব্যবস্থা নিবে বলে হুশিয়ারি দিচ্ছেন। কোন ধরনের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির আগেই মাটিকাটা বন্ধে প্রশাসনের সহযোগিতা চান এলাকাবাসী।

অভিযুক্ত আয়ুব আলীকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।