সিংগাইরে ইটভাটায় পুরছে হাজারো কৃষকের স্বপ্ন

585

 সিংগাইর (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ কথায় বলে ‘ভাত থাকলে লবণ দিয়েও খাওয়া যায়” । আর সেই একমুঠো ভাত খেয়ে কৃষকের বেঁচে থাকার সেই সপ্ন ইটভাটার বিষাক্ত গ্যাসে পুড়ে ছাড়খার। মানিকগঞ্জের সিংগাইরে ইটভাটার বিষাক্ত গ্যাসে ঝলসে গেছে কৃষকের ৩ শতাধিক বিঘা জমির পাঁকা-আধাপাঁকা বোরো ধান।

উপজেলার রিফায়েতপুর-চালিতাপাড়া চকে এমবিএম ও মেসার্স সার্ক কোম্পানির এবং জামির্ত্তা ইউনিয়নের হাতনি চকের তিন ফসলি জমিতে স্থাপিত ইটভাটার ক্ষতিকারক বিষাক্ত গ্যাসে চলতি মৌসুমের শত শত বিঘা জমির বোরো ধান ঝলসে গিয়ে কৃষকের স্বপ্ন পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।

এঘটনায় ইটভাটা বন্ধ ও ন্যায্য ক্ষতিপূরণের দাবিতে প্রতিবাদ সভা করেছে স্থানীয় কৃষকরা। রিফাইতপুর গ্রামের কৃষক এখলাছ মিয়া, মুজিবুর রহমান ও ইউপি সদস্য কলিমুদ্দীন সিকদার অভিযোগ করে বলেন, গত বুধবার রাতে সার্ক ব্রিকসের বিষাক্ত গ্যাসে অধিকাংশ কৃষকের জমির ধান ঝলসে গেছে। এতে ওই এলাকার প্রায় দেড়শ বিঘা জমির ধান নষ্ট হয়েছে।

চান্দহর গ্রামের মাহাবুব ও রিফাইতপুর গ্রামের ফজলুল হক জানান, ইটভাটার বিষাক্ত গ্যাসে ধানের ব্যাপক ক্ষতির পাশাপাশি বিভিন্ন ফলের গাছের ক্ষতি হচ্ছে। অনেক সময় গাছগুলো মরে যাচ্ছে। তিন ফসলি জমিতে অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে কৃষক ও এলাকাবাসী বিভিন্ন সময় আন্দোলন করলেও কোন স্থায়ী সমাধান করেনি প্রশাসন। গত ৩-৪ বছর একইভাবে পুড়ছে ফসল ।এসব ইটভাটা বন্ধে সরকারের দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া জরুরী। নষ্ট হওয়া ফসলের ক্ষতিপূরণ পেলেও তা সামান্য।

এদিকে জামির্ত্তা ইউনিয়নের হাতনি ও চাপরাইল চকে তিন ফসলি জমিতে গড়ে ওঠা অবৈধ ইটভাটার বিষাক্ত গ্যাস ও তাপে গত তিন বছরের ন্যায় এবারেও বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ঝলসে গেছে প্রায় ২ শত জমির বোরো ধান। ইউনিয়নের চাপড়াইলে আজিমুদ্দিণ, ভুট্টো, সেলিম মিয়া, করম আলী, পান্নু মিয়া, হাতনি আছিয়া বেগম ও হুটের জামির্ত্তার আব্দুল মালেক, আপেল মাহমুদ, রূপ কুমার, ইউসুফ ও আব্দুর রহিমের বোরো প্রজেক্টের প্রায় দুই থেকে আড়াই শত বিঘা জমির ধান ঝলসে গেছে।

স্থানীয়রা ক্ষতিপূরনের পাশাপাশি অবৈধ ইটভাটা বন্ধের দাবি তুলে বিক্ষোভ সভা করেছেন। ভাটায় চলাচলের রাস্তায় গাছ ফেলে বেরিকেড দিয়ে তারা ক্ষতিপূরণের দাবি করেছেন।

এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার(ইউএনও) রুনা লায়লা বলেন, মাঠ পর্যায়ে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকার কাজ হচ্ছে। তালিকা অনুযায়ী জেলায় পাঠিয়ে ভাটা মালিকদের কাছ থেকে অবশ্যই ক্ষতিপূরণ আদায় করা হবে। পাশাপাশি ইটভাটাগুলো চলবে কিনা সে বিষয়েও সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।