নিজস্ব প্রতিবেদকঃ প্রতিনিয়ত বিভিন্ন অভিবাসন রুট কঠিন হয়ে যাওয়ায় দালালরা এখন সাধারণ বাংলাদেশি এবং মধ্যপ্রাচ্যে অবস্থানরত প্রবাসীদের টার্গেট করে আলবেনিয়া হয়ে ইউরোপে ঢুকানোর নতুন ফাঁদ পেতেছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও টিকটকে ব্যাপক প্রচার লক্ষ্য করা গেছে। নানান লোভনীয় প্রলোভন দিয়ে বিভিন্ন বিজ্ঞাপনে সয়লাভ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম।
এরকম একজন পাচারকারীদের মধ্যস্থতাকারীর সাথে গ্রাহক সেজে কথা বলে ইনফোমাইগ্রেন্টস। যিনি নিজেই দুবাই থেকে আলবেনিয়া হয়ে বর্তমানে ইটালির একটি ক্যাম্পে অবস্থান করছেন।
তিনি আমাদের জানান, বাংলাদেশ থেকে সরাসরি টুরিস্ট ভিসা আলবেনিয়া আসা যাবে পরবর্তীতে শেঙ্গেন অঞ্চলে প্রবেশে সহায়তা করা হবে। এর জন্য তিনি বলেন নতুন পাসপোর্ট হলে ৮ লাখ টাকা আর বিগত দিনে কোনো দেশ ভ্রমণ করা থাকলে সেক্ষেত্রে ৬/৭ লাখ টাকা আলোচনা সাপেক্ষে পরিশোধ করতে হবে।
অন্যদিকে কেউ সংযুক্ত আরব আমিরাত, ওমান, বাহরাইন, সৌদি আরব সহ বেসব দেশ থেকে আসতে চাইলে তাদের জন্য বিশেষ দিবেন বলে আমাদের জানান।
জিজ্ঞাসা করা হলে আলবেনিয়ার সাথে তো কোনো শেঙ্গেন দেশের সরাসরি কোন সীমান্ত নেই সেক্ষেত্রে এরকম ভয়ংকর পথ কিভাবে পাড়ি দেয়া যাবে। জবাবে উক্ত ব্যক্তি বলেন, সেখানে এসে অনেকের সাথে পরিচয় হয়ে যাবে কোন সমস্যা নেই।
অনিশ্চিত গন্তব্য
প্রকৃতপক্ষে ভুক্তভোগীদের সাথে কথা বলে দেখা গেছে তারা যেই টাকার পরিমাণ বলে সেটি মূলত আলবেনিয়া পর্যন্ত। আলবেনিয়া থেকে কসোভো, সার্বিয়া, বসনিয়াসহ বিভিন্ন দেশ পার হয়ে ইউরোপের শেঙ্গেন অঞ্চলে প্রবেশ করা বর্তমানে এক প্রকার মৃত্যুকে আলিঙ্গন করার শামিল। তার পাশাপাশি আরও অতিরিক্ত ২/৩ লাখ টকার খরচ।
অনিয়মিত অভিবাসনের প্রতিটি ফাঁদে দালালরা এমনভাবে প্রস্তাব ও টাকার পরিমাণ বলে থাকে যা শুনলে একজন সাধারণ মানুষের মনে হবে ইউরোপে প্রবেশ খুব সহজ।
পাচারকারীরা কখনো পুরো টাকার কথা বলে না। বিভিন্ন ধাপে গিয়ে তারা যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় তখন বাধ্য হয়ে মাঝপথে অভিবাসনপ্রত্যাশীরা নতুন দালাল ধরে যে কোনো মূল্যে ইউরোপে প্রবেশ করতে চান।
আর্থিক ক্ষতির পাশাপাশি রয়েছে বিভিন্ন ট্রানজিট দেশের জঙ্গলে আটক রেখে মারধর করে টাকা আদায়। এসব ক্ষেত্রে প্রায়ই দেখা যায় অত্যন্ত নির্দয়ভাবে নির্যাতন করা হয়ে থাকে। অনেকে অভিবাসনপ্রত্যাশী লিবিয়া, তুরস্ক, বসনিয়ায় পাচারকারীদের নির্যাতনের আঘাতে পঙ্গুত্ব পর্যন্ত বরণ করেছে।
এমতাবস্থায় জীবনের নিরাপত্তা, সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনের লক্ষ্যে প্রতারকদের খপ্পরে পড়ে নিজের জীবনকে ঝুঁকিতে ফেলার আগে ভালোভাবে চিন্তা করাটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
অনিরাপদ ও ঝুঁকিপূর্ণ অভিবাসনে বাংলাদেশিসহ সকল দেশের নাগরিকদের মৃত্যুর মিছিল বন্ধ করতে পারে সচেতনতা। একটি সচেতন সিদ্ধান্তই পারে ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ এবং দেশকে রক্ষা করতে। (সংগ্রহীত)